Monday, January 29, 2018

আবেগ সাগর তীরে


নিশীথ রাতে ঘুমিয়েছে যখন পথিকেরা ,
দেহছাড়া মন তখন ও পাগলপারা ,
কোন অপরাধে কিসের তরেতে ছাড়িল সে মোরে ?
ব‍্যথিত মন কাঁদে তাই শোকডোরে ।
নিশীত রাতের সব তারাগুলো মিটিমিটি জ্বলে,
নিস্তেজ মন তখনও নিস্ফল কাঁপুনি তোলে ।
নদীর তীরেতে বসে বানালাম আবেগ তরী,
স্ফীত স্রোত,নদী ঝড় নিলো তারি কাড়ি ।

আলো ঝলমলে দিন শেষে সিগ্ধ রজনী আসে,
তেমনি মন কেন জানি আঁধার সাগরে ভাসে,
সেই সাগরে জোয়ার এসে তীর ধারে শুধু বিধে,
আমার নিস্ফল আবেগ খেলা শান্ত হয় না নিদে ।
যে মন শুধু স্বপ্ন দেখে তা কেন আজ কাঁদে ?
চলিছে  মনমাঝি আনমনে কোন অপরাধে ?
,দিনের শেষে গোধূলি লগনে পাখিরা ফিরে নীড়ে,
মনটা তখনও বসে থাকে আবেগ সাগর তীরে ।

মধ‍্যরাতে ,প্রভাতের পতীক্ষায় ,সবাই যখন রত,
সেই রাত শুধু কাঁদিয়াছে মোরে শ্রাবণ বর্ষনের মত,
বসন্তে যখন ফুল ফুটিতেছে চারিদিক,
নিজকে জানিয়াছি শুধু ধিক শত ধিক ।
প্রশ্ন যখন যুক্তিগুলোকে মানাচ্ছে শুধু হার,
তখনও আমি আবেগের জাল বুনিয়াছি বারাংবার  ।
বুঝিনি আমি এ জাল বুনন,হয়েছে কবে আশা,
কখন সে ভিরিয়াছে আমাতে হয়ে ভালবাসা ,
সে ভালবাসা গত হয়েছে ছিড়িয়া আবেগ জাল,
কান্ত হয়ে যেমনি মাঝি ছাড়ে তাহার হাল ।


মন যে শুধু পাথর হয়েছে কোমল হবে না,
আবেগ সর্প দংশায় শুধু,মোরে ছাড়ে না,
ছোট স্বপ্ন নিয়ে আমি সেই সর্প ধারে,
জানিনা আমার সেই ভালবাসা ফিরবে কভু কি নীড়ে,
স্বপ্নের সাথে বাস,স্বপ্নে কথা কই,
সে আশায় আমি নিজেরে বাধিয়া লই  ।

সব ভুলে কেন আমি আবেগের কথা বলি,
নিত্যদিন নদী হয়ে সাগরের দিকে চলি,
হাজার বছর চলে, মোর বয়ে চলা,
হাজার বছর চলে, একি কথা বলা ।

বারে বারে আমি স্বপ্ন দেখি ভুল করে জানি,
বুঝিয়াছি তার মন ফ্রেমে নেই মোর ছবিখানি,
বরফ জমা সাগর,তরী চলেনা যে দেশে,
তবুও কেন সে পথে আমি চলি হেসে হেসে ?
সে হাসির শব্দে বরফ গলিছে নিরালায়,
সাগরের মাছগুলো মাতিছে খেলায় ।
হাজার কোটি আবেগ দিয়ে লিখিলেম কবিতা,
জানিলাম তাহাতে নেই আবেগের এক ফোটা,
হঠাৎ করে সুখ পায়রা বলে,"যাও মোরে ভুলে"
"উন্নতির সিংহদ্বার সাজাবে তোমায় ফুলে ফুলে"
সে রাত যে বয়ে চলিছে প্রভাত তাহার নাই,
তবুও জানিনা, আমি কেন আকাশ পানে চায়,
যে ফুল বলে,যাও মোরে ভুলে,
কেন আমি চায় সাজাতে, অর্ঘ্য ডালা, সে ফুলে ফুলে ?

আজও তার মনে উঠে হিল্লোল,
গাহে গুন গুনিয়ে গান,
শত আবেগ মিশিয়ে উজাড় করে প্রান,
সে গানের শব্দে মিশে নেই আমি,
এসেছে নতুন জন,
উজাড় করিয়া দিয়েছে সে তারি প্রান মন ‌।

মনটা আজ শশ্মান চরী শশ্মান ঘাটের দেশে,
মৃত মানুষের কাজ যেখানে সাঙ্গ হয় অবশেষে,
চৈত্রের ক্ষরতাপ চলিছে মনে, সেথায় প্লাবন আসেনা,
মনপ্রকৃতি রুক্ষ কভু সজীব হবেনা ।
কত কাল বার,কত দিন বার,চলে মোর বহে চলা,
জানিনা কভু সাঙ্গ হবে কি ,সে আবেগ খেলা ।

কত পৌষ আসে, কত বসন্ত আসে,
সে তো আসে না,
মোর আবেগ নদীতে কভু সে সাঁতরায় না ।

প্রকৃতি আর্দ্র হয় ভরা শ্রাবণ দিনে,
বেজে উঠে মনবীনা শুধু ক্ষনে ক্ষনে,
সে সুর শুনে সব পাখি ফিরছে বুঝি নীড়ে,
তবুও মন পাখি থাকে আবেগ সাগর তীরে,

অগ্রাহন মাসে শরীষার ফুল ফুটিছে যখন মাঠে,
সব পাখি চোখ মেলিছে দিগন্তের দিকে,
এরি মাঝে একটি পাখি নিঃসঙ্গ নিরালায়,
দিকভ্রান্ত হয়ে মাতিছে আবেগ খেলায়,
সে আবেগের কোন শেষ নাই,বহে অবিরত,
শরীষার মাঠে যেমন ছুটিছে ভ্রমর শত শত ।
শত ভ্রমরের মাঝে একটি ভ্রমর হারিয়েছে তার গান,
অগ্রাহনে যেমন ধান হারায়েছে তাহার প্রান,

ধান কাটিবার মাঝে শান্ত হয়েছে কৃষকের খেলা,
কেন জানি শান্ত হয়না নিরন্তন বহে চলা ,
বুনো ঝড়ো হাওয়া সাথী হয়েছে আমার নিরালায়,
বৈশাখী হাওয়া যেমন আঘাত হানিছে মেলায়,
যে মেলা আজ পন্ড হয়েছে সবাই ফিরেছে ঘরে,
তবুও মনটা বসে আবেগ সাগর তীরে ।

আষাঢের কালে প্লাবন যখন ডুবাই চাষের ভূমি,
আবেগ সাগরে ডুবে কান্ত, শ্রান্ত, আমি ।
বন‍্যা শেষে জাগিল উর্বর কোমন ভূমি,
তবুও শ্রান্ত রিক্ত আবেগ সাগরের শেষ নাহি জানি ।
আপনার সে কভু হয় নাই,
কভু সে যে হবেনা,
প্রণয় সাগরে ডুবিয়াছি আমি,
তাহারে পাবো না,
এ যে শুধু নিস্ফল আশা,
ব‍্যর্থ আমার প্রান,
নতুন করে কভু আমি গাহিবো না আর গান ।

আজ হয়েছে প্রভাত তবুও নাইকো সূর্যের দেখা,
সেই প্রভাতে নিজকে লাগে শুধু একা,
সেই একাকিত্বে কুয়াশা থাকে মিশে,
মাঝে মাঝে মন এখনো  আবেগ সাগর খোজে ।

সে যেখানেই থাক,যার সাথে থাক মিশে,
কেউ কি তারে পারবে নিতে আমার কল্পনা হতে,
কল্পনাতে মিশে থাকুক আমার ভালবাসা,
বাস্তবে নহে,কল্পনাতে হোক তবে কথা ।
না চাক সে,না শুনুক সে আমার এ গান,
যাক যেথায় খুসি ,তাহার চঞ্চল প্রান,
চাহিব না আর,ডাকব না আর আমি,
মন ফ্রেমে রাখবো না আর তাহার ছবি খানি ।
ডাকলেও সে ফিরবো না আর আবেগ সাগর তীরে,
মুক্ত প্রান,স্বাধীন হয়ে ফিরলেম আপন নীড়ে ।
কাঁদতে হবে নিরবে তোমায় এটাই আমি জানি,
নিজে থেকে ফিরবে তুমি এটাও যে মানি ।-


আসাদুল্লাহ হিমু। 






No comments:

Post a Comment